হাইব্রিড ধান চাষের খুটিনাটি
ধান বাংলাদেশের একটি প্রধান খাদ্য-শস্য জাতীয় ফসল। এই ফসল বাংলার মানুষের জীবন রক্ষা করেছিল এবং বর্তমানে ও করছে, ভবিষ্যতে ও করবে।
বাংলাদেশের প্রধান খাবার হলো মাছ-ভাত।তাই
বাংলার মানুষকে মাছে-ভাতে বাঙ্গালি হিসেবে সারা বিশ্ব চেনে।
ভাত বাংলাদেশের মানুষের প্রিয় খাবার।
তাইতো মানুষ একদিন ভালোমন্দ খাবার ছাড়া চলতে পারে। কিন্তু ভাত না খেয়ে চলতে পারে না।বাংলার মানুষ খাদ্য রসিক, তারা খাবার খেতে পছন্দ করে। তবে আগে ভাত তার পরে যে কোনো কিছু।
হাইব্রিড ধান চাষের পদ্ধতিঃ
1️⃣হাইব্রিড বীজ সংগ্রহ
2️⃣ আর্দশ জমি নির্বাচন করা
3️⃣পরিবেশ বান্ধব সার সংগ্রহ
4️⃣আর্দশ বীজতলা তৈরি
5️⃣বীজ বপন পদ্ধতি
6️⃣পানি সেচ দেওয়ার পদ্ধতি
7️⃣আগাছা দমন পদ্ধতি
8️⃣যর্থাসময়ে কীটনাশক প্রয়োগ
9️⃣ধানের সঠিক পরিচর্যা
🔟দক্ষ শ্রমিকের মাধ্যমে ধান কেটে সংগ্রহ
1️⃣1️⃣সঠিক উপায়ে ধান মাড়াই পদ্ধতি
1️⃣2️⃣ধান সংরক্ষণের সঠিক সময়
1️⃣3️⃣ধান চাষের কয়টি মৌসুম
1️⃣4️⃣ধান থেকে কি কি পাওয়া যায় -চাউল,গবাদিপশুর জন্য কুড়া,হাস-মুরগির জন্য ক্ষুদ্র, খড়,এবং জ্বালানির জন্য তুষ ইত্যাদি
1️⃣5️⃣ ধান থেকে কিভাবে চাউল বের করে?
♦️হাইব্রিড বীজ সংগ্রহ♦️
হাইব্রিড বীজের জন্য তোমাকে তোমার নিকটস্থ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করতে হবে। অফিসার রা তোমাকে জানিয়ে দিবে কোথা থেকে হাইব্রিড ধান বীজ পাওয়া যায়।
আবার তুমি স্থানীয় নিকটস্থ বাজারে কীটনাশক বিক্রি ওলার কাছ থেকে ও নিতো পারো। তবে এক্ষেত্রে তোমাকে যাচাই-বাছাই করে পন্যটি নিতে হবে।
♦️আর্দশ জমি নির্বাচন করা♦️
বৌরো মৌসুমঃ
জমি নির্বাচনের জন্য অবশ্যই তোমাকে দোআঁশ মাটি চয়েস করতে হবে। কারন দোআঁশ মাটিতে চারার শিকড় দ্রুত ছাড়ে, ফলে চারার বৃদ্ধি ও দ্রুত হবে।
এই মৌসুমে প্রধানত আষাঢ়-শ্রাবন মাসে ধানের চাষ শুরু হয়।
আমন মৌসুমঃ
এই মৌসুমে তোমাকে অবশ্যই এঁটেল মাটি চয়েস করতে হবে। এই মৌসুমে প্রধানত পৌষ-মাঘ মাসে ধানের চারা জমিতে রোপন করার আর্দশ সময়।
♦️পরিবেশ বান্ধব সার সংগ্রহ♦️
সার প্রধানত দুই প্রকার,
১.জৈব সার
২.রাসায়নিক সার
জৈব সারঃ
সাধারণত গবাদিপশুর মলমূত্র(গোবর), তরিতরকারির খোসা, সবুজ উদ্ভিদ, ইত্যাদি পচিয়ে যে সার তৈরি করা হয় তাই ই হলো জৈব সার।
এই সার জমিতে বপন করলে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায়। জমির ফলন দ্বিগুন বেড়ে যায়। কীটনাশক মুক্ত হওয়ায় মানব দেহের কোনো ক্ষতি করে না। মানুষের শরীর সুসাস্থ ঠিক থাকে।
রাসায়নিক সারঃ
যে সব সার কল-কারখানার মেশিনের মাধ্যমে বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান মিশিয়ে তৈরি করা হয় তাকে রাসায়নিক সার বলে।
এই সার মানব শরীরের জন্য হুমকিস্বরূপ এবং মারাত্মক ক্ষতি হয়।
এই সার প্রয়োগে জমির উর্বরতা শক্তি হ্রাস পায়।
ফলে ফসলের ফলন কমে যায়। এই সার পরিমান মতো আমাদের সকলকে জমিতে বপন করতে হবে ফলে পরিবেশ দূষণ কিছুটা হলেও কমাতে পারবো আমরা।
এই সার না ব্যাবহার করাটাই হলো উত্তম। তাই সরকার কে উচিত বেশি বেশি জৈব সার উৎপাদনের ব্যাবস্থা করা।
♦️আদর্শ বীজতলা তৈরি♦️
আদর্শ বীজতলা তৈরি করার জন্য তোমাকে ঢালু জমি নির্বাচন করতে। কারন যখন অতি পরিমাণে বৃষ্টি হবে তখন জমি ঢালু থাকলে ফসলের তেমন কোনো ক্ষতি হবে না।
বীজ তলার চতুর দিকে জমির পরিধি সমান রাখবে। ফলে জমিতে সেচ দেওয়া সহজ হবে।
জমিতে দুই থেকে তিন বার সুন্দর ভাবে পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ দিতে হবে। খেয়াল রাখবে যেন জমির মাটি আগলা বা ঠিলেঠালা থাকে। এতে ফসল দ্রুত বৃদ্ধি পাবে।
♦️বীজ বপন পদ্ধতি♦️
বীজ সাধারণত দুটি উপায়ে বপন করা যায়,
১.শুকনো পদ্ধতিতে
২.কাদাময় ভিজা পদ্ধতি
শুকনো পদ্ধতিঃ
এই পদ্ধতিতে জমিতে প্রথম পাওয়ার টিলার দিয়ে দুই -তিন বার চাষ দিয়ে মাটি চাষাবাদের উপযোগী করে, জমিতে বীজ ফেলে পানি দিতে হবে। ফলে বীজ মাটির উপরে থাকবে সূর্যের আলো সরাসরি পাবো আর ফসলের ফলন দ্রুত বৃদ্ধি পাবে।
ভিজা কাদাময় পদ্ধতিঃ
এই পদ্ধতিতে জমি চাষ দিয়ে কাদাময় করে, মই দিয়ে সমান করে বীজ জমিতে বপন করতে হবে। এ পদ্ধতি তে জমিতে ফসল ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়।
♦️পানি সেচ দেওয়ার পদ্ধতি♦️
পানি সেচ দেওয়া পদ্ধতি সাধারণত দুটি,
১.মাটির ড্রেন বা লাইন
২.,প্লাস্টিকের ফিতা দিয়ে
মাটির ড্রেনঃ
এই পদ্ধতি তে জমিতে পানি দিলে পানি অনেক টা অপচয় হয় ফলে জ্বালানি বা বিদ্যুৎ বেশি পরিমাণে খরচ হয়।কারন অনেক সময় ইদুরে মাটির ড্রেনে গর্ত তৈরি করে তখন ও-ই গর্ত দিয়ে পানি অন্য জায়গায় অন্যদের জমিতে চলে যায় এবং অপচয় হয়।
প্লাস্টিকের ফিতা দিয়েঃ
এই পদ্ধতি তে জমিতে পানি সেচ দিলে পানি কোনো অপচয় হয় না। ফলে জ্বালানি খরচ কম বা সাশ্রয় হয়।
♦️আগাছা দমন পদ্ধতি♦️
ধানের চারার বয়স যখন ১৫ দিন তখন জমিতে দক্ষ শ্রমিক নিয়ে জমির সব আগাছা পরিষ্কার বা কেটে ফেলতে হবে।
♦️যর্থাসময়ে কীটনাশক প্রয়োগ♦️
জমিতে চারার বয়স যখন ১৫ দিন তখন জমির আগাছা পরিষ্কার করে, জমিতে ইউরিয়া ও জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে।
তাছাড়া তুমি জমি তৈরী করার সময় জমিতে পরিমান মতো জৈব ও রাসায়নিক সার বপন করবে।
♦️ধানের সঠিক পরিচর্যা♦️
যখন ধান গাছের বয়স ১থেকে দেড় মাস তখন তুমি জমি খেয়াল রাখবে কোনো ছাত্রাক নাশক পোকায় আক্রমণ করছে কি। যদি দেখ পোকায় আক্রমণ করেছে তৎক্ষনার্থ কৃষি অফিসারের সাথে যোগাযোগ করবে এবং তার পরামর্শ অনুযায়ী জমিতে পোকামাকড় দমন, ছত্রাক নাশক কীটনাশক জমিতে প্রয়োগ করবে।
♦️দক্ষ শ্রমিকের মাধ্যমে ধান কাটা♦️
যারা ধান কাটছে পারদর্শী তাদের নিয়ে ধান কাটবে।
কারন দক্ষ শ্রমিকেরা অনায়াসে ধানের বোঝা নিতে পারবো। ফলে তোমার ধান কাটা কোন চাপ ছাড়াই হয়ে যাবে।
প্রয়োজনে তাদের মজুরি থেকে ৫০ টাকা বেশি দিবে। ফলে তারা উৎসাহিত হয়ে তোমার ধান কেটে দিবে।
♦ফরিদপুরের সালথা বাজারে ধানের দাম বাড়লো ♦
প্রতি মন ধান বিক্রি হচ্ছে ১০০০-১১০০ টাকা।
খুচরা বাজারে কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩২ টাকা।
0 Comments